HISTORY OF FOOTBALL ( 1978 WORLD CUP )

world cup 1978,1978 world cup,argentina 1978,1978 fifa world cup (football world cup),fifa world cup 1978,1978 fifa world cup,1978 world cup final,wor

 ১৯৭৮ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ

এই বিশ্বকাপটি ফিফা কর্তৃক পুরুষ জাতীয় দলের একাদশ সংস্করন। এই বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ ছিলো আর্জেন্টিনা। ১৯৭৮ সালের ১ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত এটি অনুষ্ঠিত হয়। ১৬ টি দেশ নিয়ে এই বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়। টুর্নামেন্টে মোট ৩৮ টি ম্যাচ হয়।মোট ১০২ ( ম্যাচ প্রতি গড়ে ২.৬৮ ) টি গোল হয়। শীর্ষ স্কোরার হন আর্জেন্টিনার মারিও কেম্পেস ( ৬ গোল )। সেরা তরুণ খেলোয়ার হন ইতালিয়ন আন্তেনিও ক্যাব্রিনি। ফেয়ার প্লে পুরষ্কার লাভ করে আর্জেন্টিনা। এই বিশ্বকাপের মাধ্যমে আর্জেন্টিনা তাদের প্রথম শিরোপা অর্জন করে।

হোস্ট নির্বাচন

৬ জুলাই ১৯৬৬ তারিখে ইংল্যান্ডে ফিফা স্বাগতিক দেশ হিসাবে আর্জেন্টিনাকে নির্বাচিত করে। এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের জন্য ৭০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার রাখা হয়েছিলো। যার মাধ্যমে তিনটি নতুন স্টেডিয়াম  তৈরি, তিনটি পননির্মাণ করা হয় েএবং ৫ টি প্রেস সেন্টার নির্মান করা হয়।

যোগ্যতা অর্জন

১০০ টিরও বেশি দেশ এই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছিলো। দ্বিতীয় বারের মতো ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম, সোভিয়েত ইউনিয়ন  এবং চেকোস্লোভাকিয়া এই বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়। এই বিশ্বকাপে নতুন ছিলো ইরান ও তিউনিশিয়া। ১৯৫৮ সালের পর অস্ট্রিয়া প্রথম বারের মতো চান্স পায়।

যোগ্যতা অর্জনকারী দলসমুহ

বাছায় পর্বের মাধ্যমে ১৬ টি দলকে বিশ্বকাপের মুল পর্বে জায়গা দেওয়া হয়। নিম্নে ১৬ টি দলের তালিকা দেওয়া হলো:-

  • তিউনিসিয়া
  • ইরান
  • মেক্সিকো
  • ব্রাজিল
  • আর্জেন্টিনা
  • পেরু
  • ফ্রান্স
  • অস্ট্রিয়া
  • ইতালি
  • হাঙ্গেরি
  • নেদারল্যান্ড
  • স্পেন
  • পশ্চিম জার্মানি
  • সুইডেন
  • স্কটল্যান্ড
  • পোল্যান্ড
খেলার বিন্যাস

মূল পর্বে জায়গা পাওয়া ১৬ টি দলকে ৪ টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিলো। প্রতিটি গ্রুপের খেলায় ড্রয়ের জন্য ১ পয়েন্ট এবং প্রতিটা জয়ের জন্য ২ পয়েন্ট। প্রতিটা গ্রুপের শীর্ষ দল এবং রানার্সআপকে নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে সুযোগ দেওয়া হয়। দ্বিতীয় রাউন্ডেও দুইটি গ্রুপে খেলা হয়। দুইটি গ্রুপের শীর্ষ দলকে নিয়ে ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। দুইটি গ্রুপের রানার্সআপকে ৩য় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে খেলানো হয়।

প্রথম রাউন্ডের খেলা

১ম গ্রুপ

এই গ্রুপে আর্জেন্টিনা, ইতালি, হাঙ্গেরি এবং ফ্রান্স সুযোগ হয়। এই গ্রুপ থেকে ইতালি সর্বোচ্চ ৬ পয়েন্ট নিয়ে এবং আর্জেন্টিনা ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যায়।

২য় গ্রুপ

পশ্চিম জার্মানি. পোল্যান্ড, তিউনিসিয়া এবং মেক্সিকো এই গ্রুপে অংশগ্রহণ করে। এই গ্রুপ থেকে পোল্যান্ড ৫ পয়েন্ট এবং পশ্চিম জার্মানি ৪ পয়েন্ট নিয়ে পরবর্তী রাউন্ডে এগিয়ে যায়।

৩য় গ্রুপ

ব্রাজিল, অস্ট্রিয়া, সুইডেন এবং স্পেনকে নিয়ে গ্রুপের খেলা হয়। এই গ্রুপ থেকে অস্ট্রিয়া এবং ব্রাজিল সমান ৪ পয়েন্ট নিয়ে পরবর্তী রাউন্ডে এগিয়ে যায়।

৪র্থ গ্রুপ

নেদারল্যান্ড, পেরু, স্কটল্যান্ড এবং ইরান এই গ্রুপে নিজেদের মুখোমুখি হয়। পেরু ৫ পয়েন্ট নিয়ে এবং নেদারল্যান্ড ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে যায়।

দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা

প্রথম রাউন্ডের খেলা হতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং গ্রুপ রানার্সআপ মোট  ৮টি দলকে নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের গ্রুপ নির্বাচন করা হয়। দ্বিতীয় রাউন্ডে ৮ টি দলকে দুইটি গ্রুপে ভাগ করা হয়।

গ্রুপ এ

ইতালি, নেদারল্যান্ড, অস্টিয়া এবং পশ্চিম জার্মানিকে এই গ্রুপে খেলা হয়। এই গ্রুপ থেকে নেদারল্যান্ড সর্বোচ্চ ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সরাসরি ফাইনালে উঠে যায়। ইতালি ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে তাহলে ৩য় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে খেলে।

গ্রুপ বি

ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, পোল্যান্ড এবং পেরু এই গ্রুপে জায়গা পায়। আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল সমান ৫ পয়ন্ট পায়। আর্জেন্টিনা গোল পজিশনে এগিয়ে থেকে ফাইনালে জায়গা পায়। ব্রাজিল গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে ৩য় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে েঅংশগ্রহণ করে।

৩য় এবং ৪র্থ স্থান নির্ধারণী ম্যাচ

এস্টাডিও মনুমেন্টাল, বুয়েনস আইরেসে এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এই ম্যাচে ৬৯ ৬৫৯ জন দর্শক ছিলো। রেফারির দায়িত্ত পালন করে ইসরায়েলের আব্রাহাম ক্লেইন। ব্রাজিল ২-১ গোলে ইতালিকে হারিয়ে তৃতীয় স্থান লাভ করে। ব্রাজিলের হয়ে একটি করে গোল করে নেলিনহো ও ডারছিও। ইতালির হয়ে একটি গোল করেন কাসিও।

ফাইনাল ম্যাচ

১৯৭৮ সালের ২৫ জুন ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। এস্টাডিও মনুমেন্টাল, বুয়েনস আইরেসে এই ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। দর্শক ছিলো ৭১,৪৮৩ জন। ম্যাচ রেফারি ছিলো ইতালির সার্জিও গোনেলা। খেলার নির্ধারিত সময় শেষে ১-১ গোলে ড্র হয়। কিন্তু অতিরিক্ত সময় শেষে আর্জেন্টিনা আরো দুইটি গোল যোগ করে । আর্জেন্টিনা ৩-১ গোলে ম্যাচ জিতে প্রথম বিশ্বকাপ অর্জন করে।

আর্জেন্টিনার হয়ে কেম্পেস দুইটি এবং বার্টোনি একটি গোল করেনে। নেদারল্যান্ডের হয়ে নানিঙ্গা একমাত্র গোল করেন।

এই বিশ্বকাপের সময় কিংবদন্তি ডিয়াগো ম্যারাডোনার বয়স ছিলো ১৭ বছর। বয়স কম থাকায় ম্যারাডোনাকে এই বিশ্বকাপে সুযোগ দেওয়া হয়নি।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url