HISTORY OF FOOTBALL ( 1982 WORLD CUP )

 

1982 world cup,wc 1982,spain 1982,world cup 1982,1982 fifa world cup,world cup 1982 all goals,1982 football,italia brasil 1982,germany france 1982,france germany 1982,soccer world cup 1982,world cup qualifiers 1982,1982 fifa world cup (event)

১৯৮২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ

এটি ফিফা কর্তৃক আয়োজিত পুরুষ জাতীয় ফুটবল দলের ১২তম সংস্করন। ১৯৮২ সালের ১৩ জুন থেকে ১১ জুলাই তারিখের মধ্যে টুর্নামেন্টের খেলাগুলো সম্পন্ন হয়। এই বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ ছিলো স্পেন। এই টুর্নামেন্ট ২৪ দল নিয়ে মূল পর্বের খেলা হয়। এই বিশ্বকাপের মাধ্যমে ইতালি তাদের তৃতীয় শিরোপা অর্জন করে। মোট ৫২ টি ম্যাচ খেলা হয়। টুর্নামেন্টে মোট ১৪৬ ( ম্যাচ প্রতি গড়ে ২.৮১ ) টি গোল হয়। এই বিশ্বকাপে মোট ২,১০৯,৭২৩ (ম্যাচ প্রতি গড়ে ৪০,৫৭২) জন দর্শ ক উপস্থিত ছিলো। শীর্ষ স্কোরার হন পাওলো রসি (৬ গোল) । সেরা খেলোয়াড়ও হন পাওলো রসি। সেরা তরুণ খেলোয়াড় নির্বাচিত হন ম্যানুয়েল আমরোস। ফেয়ার প্লে পুরষ্কার লাভ করে ব্রাজিল। এই বিশ্বকাপে প্রথম শুট-আউট দেখে ফুটবল ভক্তরা। মূল পর্বের ৩য় গ্রুপে হাঙ্গেরি এল সালভাদরকে ১০-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে । এই টুর্নামেন্টি ছিলো বিনোদনমূলক। শুধু কিছু হিংসাত্মক ফাউল এবং দুর্বল অফিসিয়াটিং ছাড়া। এই টুর্নামেন্টে ৫ ( আর্জেন্টিনার আমেরিকান গ্যালেগো, দিয়েগো ম্যারাডোনা, হন্ডুরাসের গিলবার্তো ইয়ারউড, চেকোস্লোভাকিয়ার লাদিস্লাভ ভিজেক এবং মাল ডনাঘি) জন প্লেয়ারকে লাল কার্ড দেখানো হয়।

স্বাগতিক দেশ নির্বাচন

১৯৬৬ সালের ৬ জুলাই লন্ডনে স্পেনকে স্বাগতিক হিসাবে ফিফা ঘোষনা দিয়েছিলো। ১৯৭৪ সালের বিশ্বকাপের হোস্টিং পশ্বিম জার্মানিকে নিবাচনের সময় স্পেনের সাথে পশ্চিম জার্মানির সাথে িএকটি চুক্তি হয়। ১৯৭৪ সালের হোস্টিংয়ে স্পেন জার্মানিকে সাপোর্ট  করবে  এবং ১৯৮২ সালের হোস্টিং নির্বাচনে পশ্চিম জার্মানি স্পেনকে সমর্থন করবে।

যোগ্যতা অর্জন

এই বিশ্বকাপে প্রথম বারের মতো ১৬ দল থেকে ২৪ দলকে নিয়ে মূল বিশ্বকাপ পর্বের আয়োজন করাহয়। এই বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো আলজেরিয়া, ক্যামেরুন, কুয়েত, নিউজিল্যান্ড এবং হন্ডুরাস অংশগ্রহন করেছিলো। শেষ বারের মতো এল সালভাদর এবং কুয়েত বিশ্বকাপের মূল পর্বে যোগ্যতা অর্জন করেছিলো।

মূল পর্বে জায়গা পাওয়া ২৪ টি দলগুলো হলো:-

  • কুয়েত
  • ক্যামেরুন
  • আলজেরিয়া
  • এল সালভাদর
  • হন্ডুরাস
  • নিউজিল্যান্ড
  • ব্রাজিল
  • আর্জেন্টিনা
  • পেরু
  • চিলি
  • বেলজিয়াম
  • অস্ট্রিয়া
  • ইংল্যান্ড
  • হাঙ্গেরি
  • ফ্রান্স
  • উত্তর আয়ারল্যান্ড
  • ইতালি
  • পোল্যান্ড
  • সোভিয়েত ইউনিয়ন
  • স্কটল্যান্ড
  • পশ্চিম জার্মানি
  • স্পেন ( স্বাগতিক ) এবং
  • যুগোস্লাভিয়া
  • সেকোস্লোভাকিয়া
খেলার বিন্যাস

প্রথম রাউন্ডে ২৪ টি দলকে মোট ৬ টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিলো। প্রতিটি ড্রয়ের জন্য এক পয়েন্ট এবং প্রতিটি জয়ের জন্য দুই পয়েন্ট দেওয়া হয়। প্রতিটি গ্রুপের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপকে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়। দ্বিতীয় রাউন্ডের ১২ টি দলকে আবার ৪ টি গ্রপে ভাগ করা হয়। এখানেও প্রথম রাউন্ডের মতো খেলা হয়। ৪ টি গ্রুপের চ্যাম্পিয়নকে নিয়ে সেমিফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রথম রাউন্ডের খেলা

গ্রুপ ১

পোল্যান্ড, ক্যামেরুন, ইতালি এবং পেরু এই গ্রুপে ছিলো। এই গ্রুপ থেকে পোল্যান্ড সর্বোচ্চ ৪ পয়েন্ট এবং ইতালি ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে এগিয়ে যায়।

গ্রুপ ২

এই গ্রুপে অস্ট্রিয়া, পশ্চিম জার্মানি, চিলি এবং আলজেরিয়া নিজেদের মুখোমুখি হয়। এই গ্রুপ থেকে পশ্চিম জার্মানি এবং অস্ট্রিয়া সমান ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে এগিয়ে যায়।

গ্রুপ ৩

আর্জেন্টিনা, বেলজিয়াম, হাঙ্গেরি এবং এল সালভাদর এই গ্রুপে ছিলো। এই গ্রুপ থেকে বেলজিয়াম সর্বোচ্চ ৫ পয়েন্ট নিয়ে এবং আর্জেন্টিনা ৪ পয়েন্ট নিয়ে পরবর্তী রাউন্ডে এগিয়ে যায়।

গ্রুপ ৪

ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, কুয়েত এবং চেকোস্লোভাকিয়া এই গ্রুপে নিজেদের মধ্যে লড়ায় করে। এখান থেকে ইংল্যান্ড সর্বোচ্চ ৬ পয়েন্ট অর্জন করে এবং ফ্রান্স ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে এগিয়ে যায়।

গ্রুপ ৫

উত্তর আয়ারল্যান্ড, যুগোস্লাভিয়া, হন্ডুরাস এবং স্পেন ( স্বাগতিক ) এই গ্রুপে অংশগ্রহণ করে। উত্তর আমেরিকা সর্বোচ্চ ৪ পয়েন্ট  এবং স্পেন ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে এগিয়ে যায়।

গ্রুপ ৬

ব্রাজিল, স্কটল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন এই গ্রুপে জায়গা পায়। এই গ্রুপ থেকে ব্রাজিল সর্বোচ্চ ৬ পয়েন্ট এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন ৩ পয়েন্ট অর্জন করে পরবর্তী রাউন্ডে খেলার সুযোগ পায়।

দ্বিতীয় রাউন্ডের গ্রুপ পর্বের খেলা

প্রথম রাউন্ডের প্রতিটা গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ মোট ১২ (পোল্যান্ড, ইতালি, পশ্চিম জার্মানি, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, আর্জেন্টিনা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স,উত্তর আমেরিকা, স্পেন, ব্রাজিল এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন) টি দলকে নিয়ে দ্বিতীয় পর্বের খেলা অনুষ্ঠিত হয়। ৩ টি দলের ৪ গ্রুপে ভাগ করা হয়।

গ্রুপ এ

সোভিয়েত ইউনিয়ন, বেলজিয়াম এবং পোল্যান্ড এই গ্রুপে নিজেদের মধ্যে মুখোমুখি হয়। এই  গ্রুপ থেকে পোল্যান্ড এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন সমান ৩ পয়েন্ট অর্জন করে। কিন্তু পোল্যান্ড গোল পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকায় নকআউট পর্বে উঠে যায়। এই গ্রুপে বেলজিয়াম কোনো পয়েন্ট অর্জন না করেই বিদায় হয়।

গ্রুপ বি

এই গ্রুপে ইংল্যান্ড, পশ্চিম জার্মানি এবং স্বাগতিক স্পেন অংশগ্রহণ করে। এখান থেকে পশ্চিম জার্মানি সর্বোচ্চ ৩ পয়েন্ট অর্জন করে সেমিফাইনালে এগিয়ে যায়। ইংল্যান্ড ২ পয়েন্ট এবং স্পেন ১ পয়েন্ট অর্জন করে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় গ্রহণ করে।

গ্রুপ সি

ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এবং ইতালি এই গ্রুপে সুযোগ পাই। এই গ্রুপ থেকে ইতালি ৪ পয়েন্ট অর্জন করে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ লাভ করে। ব্রাজিল ২ পয়েন্ট এবং আর্জেন্টিনা কোনো পয়েন্ট অর্জন না করেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ে।

গ্রুপ ডি

অস্ট্রিয়া, ফ্রান্স এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড এই গ্রুপে ছিলো। ফ্রান্স সর্বোচ্চ ৪ পয়েন্ট নিয়ে নকআউট পর্বে এগিয়ে যায়। অস্ট্রিয়া এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড সমান এক পয়েন্ট অর্জন করে টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়ে।

নকআউট পর্বের খেলা

সেমিফাইনাল ১

এই ম্যাচে পোল্যান্ড এবং ইতালি মুখোমুখি হয়। ইতালি ২-০ গোলে পোল্যান্ডকে পরাজিত করে ফাইনালে এগিয়ে যায়। ইতালির হয়ে দুইটি গোল করেন রসি। ক্যাম্প ন্যু, বার্সেলোনায় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৫০,০০০ দর্শক ছিলো।

সেমিফাইনাল ২

পশ্চিম জার্মানি এবং ফ্রান্স এই ম্যাচে অংশগ্রহণ করে। খেলার নির্ধারিত ৯০ মিনিটে দুইটি দল ১-১ গোলে ড্র করলে পরবর্তীতে খেলা অতিরিক্ত ৩০ দেওয়া হয়। অতিরিক্ত সময়ে দুই দল আরো দইটি করে গোল করলে খেলা ৩-৩ গোলে ড্র হয়। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এই প্রথম পেনাল্টি শুটআউট দেওয়া হয়। পেনাল্টি শুটআউটে পশ্চিম জার্মানি ৫-৪ গোলে এগিয়ে থেকে ফাইনালে এগিয়ে যায়। এদিন ৭০,০০০ দর্শক উপস্থিত ছিলো।

তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ

সেমিফাইনালে পরাজিত দুইদল পোল্যান্ড এবং ফ্রান্স এই ম্যাচে এক অপরের মুখোমুখি হয়। পোল্যান্ড ৩-২ গোলে ফ্রান্সকে পরাজিত করে তৃতীয় স্থান অর্জন করে। এস্তাদিও জোসে রিকো পেরেজ, অ্যালিক্যান্টে এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। ২৮,০০০ দর্শক উপস্থিত ছিলো।

ফাইনাল ম্যাচ

ইতালি এবং পশিম জার্মানি ফাইনালে অংশগ্রহণ করে। ১৯৮২ সালের ১১ জুলাই তারিখে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু, মাদ্রিদে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। ৯০,০০০ জন দর্শক খেলাটি উপভোগ করেছিলো। ম্যাচটির রেফারির দায়িত্ত পালন করেন ব্রাজিলের আর্নালদো সেজার কোয়েলহো। ইতালি ৩-১ গোলে পম্চি জার্মানিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। ইতালির হয়ে একটি করে গোল করেন রসি, তারদেলি এবং আল্টোবেলি। পশ্চিম জার্মানির হয়ে িএকমাত্র গোল করেন ব্রিটনার।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url